বর্তমানে আমরা সকল কাজ অনলাইনে করতে পারি ঠিক তেমনি আমরা অনলাইনে টাকা লোন এর জন্য আবেদন করতে পারব অনলাইন থেকে আমরা টাকা লোন নিতে পারবো। বিষয়টা শুনতে একটু আশ্চর্যজনক মনে হলেও এটাই সত্য বর্তমানে অনেক অ্যাপ্লিকেশন আছে যেগুলোর মাধ্যমে আমরা টাকা লোন নিতে পারবো। আজকে আমাদের আলোচনার উদ্দেশ্য হলো অনলাইনে লোন পাওয়ার সহজ উপায় সম্পর্কে। কিভাবে আপনি সহজে অনলাইন থেকে লোন নিতে পারবেন কোন ঝামেলা ছাড়াই।
অনলাইনে লোন পাওয়ার উপায়
লোনের ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অনেকেই বর্তমানে অনলাইনে লোন নিয়ে থাকে। তেমন কোন ঝামেলা ছাড়াই খুব সহজে অনলাইনে লোন পাওয়া যায় কিন্তু অনলাইনে লোন পাওয়ার জন্য আমাদের কিছু নিয়ম কানুন মেনে লোনের জন্য আবেদন করতে হবে।
এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে অনলাইনে লোন পাওয়ার সহজ উপায় আপনাদের সাথে শেয়ার করব এবং কোন কোন অ্যাপস এর মাধ্যমে আপনি অনলাইনে লোন পেতে পারেন সে সম্পর্কেও আলোচনা করব। অনলাইনের লোনে আপনি আপনার নির্দিষ্ট পরিমাণমতো টাকা লোন নিতে পারবেন এবং লোন পাওয়ার জন্য আপনাকে কোন জায়গায় দৌড়াদৌড়ি করতে হবে না।
অনলাইনে লোন
অনেক সময় আমরা আর্থিক সমস্যায় পড়ি আমাদের টাকার খুব প্রয়োজন হয় কিন্তু তখন টাকা নিজেদের কাছে থাকেনা এবং অন্য মানুষের কাছ থেকেও লোন পাওয়া যায় না। কিন্তু আমাদের টাকার খুব প্রয়োজন তখন আমরা চাইলে অনলাইনে লোন নিতে পারি। বর্তমানে অনলাইন লোন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
মানুষের দ্বারে দ্বারে না ঘুরে খুব সহজে অনলাইনের মাধ্যমে লোন নিতে পারবেন। কিন্তু অনেক সময় সঠিক পদ্ধতি না জানার কারণে আমরা অনলাইনে লোন নিতে পারিনা। লোনের সকল ঝামেলা মিটানোর জন্য অনলাইনে লোন পাওয়ার সহজ উপায় সম্পর্কে আপনাদের মাঝে আলোচনা করলাম।
খুব সহজে অনলাইনে লোন এর জন্য কিভাবে আবেদন করবেন এবং কোথা থেকে অনলাইনে লোন নিতে পারবেন ও কি কি উপায়ে অনলাইনে লোন নিতে পারবেন এ সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো।
গুরুত্বপূর্ণ টিকাঃ বিকাশ থেকে 125 টাকা ফ্রিতে
কিভাবে অনলাইনে টাকা লোন নিতে পারবেন
কোন ব্যক্তি বা কোম্পানির কাছ থেকে লোন নিতে গেলে আমরা অনেক ধরনের ঝামেলা ফেস করি ও বড় অংকের টাকা সুদ দিতে হয় । কিন্তু আমরা অনলাইনে খুব সহজে লোন নিতে পারব – অনলাইন থেকে লোনের জন্য আবেদন করতে হলে আমাদের বেশকিছু পদ্ধতি মেনে চলতে হবে যেমনঃ
- প্রথমে ঋণের পরিমাণ নির্ধারণ করা
আপনার কত টাকা ঋণ প্রয়োজন আপনি কত টাকা ঋণ নিতে চাচ্ছেন সেটা আগে সিলেক্ট করা।
- পূর্বের ঋণ নেওয়া থাকলে আপনার ই এম আই দেয়ার পরিকল্পনা
বর্তমানে পরিশোধ করেছেন এমন কোনো ঋণ বা ক্রেডিট কার্ড এর বকেয়া পাওনা থাকলে সেটা বিবেচনা করে নিবেন।
- মাসিক কত টাকা ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন
আপনি মাসে কত টাকা পর্যন্ত ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন সেটা ঠিক করে নিবেন। এছাড়াও আপনি পার্সোনাল লোন এ জিবিলিটি ক্যালকুলেটরের সাহায্য নিতে পারেন।
- নিজেকে প্রমাণ করা
নিজেকে প্রমাণ করার জন্য আপনি কেওয়াইসি ফরম এর সঠিক কপি জমা দিন এবং আপনার ফোন নাম্বার ওটিপি কোড এর মাধ্যমে ভেরিফিকেশন করতে হবে এই পদ্ধতির মাধ্যমে আপনাকে যাচাই বাছাই করা হবে।
- লোন সম্পর্কে জানুন এবং বর্তমানে লোনের অফারগুলো জানুন
লোন নেয়ার আগে অবশ্যই আপনাকে এর নিয়ম কানুন সম্পর্কে জানতে হবে এবং কখন কোন ধরনের অফার চলে সে সম্পর্কেও জ্ঞান রাখতে হবে।
- ইলেকট্রিক স্বাক্ষর
লোন পাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে স্বাক্ষর করতে হবে কিন্তু এই স্বাক্ষরটি একটু ভিন্ন আপনি আপনার হাতে থাকা মোবাইল টির মাধ্যমে স্কিনের উপর আপনার আঙুল দিয়ে স্বাক্ষর করতে পারবেন। তবে কীভাবে স্বাক্ষর করেছিলেন সেটি আপনার মনে রাখতে হবে পরবর্তীতে কাজে প্রয়োজন হতে পারে।
- ব্যাংক অ্যাকাউন্ট প্রয়োজন
লোনের টাকা নেয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এর প্রয়োজন হবে। লোন নেয়ার আগে অবশ্যই একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে নিবেন।
অনলাইনে লোন নেয়ার জন্য যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন
অনলাইনে লোন নেয়ার জন্য আমাদের কিছু কাগজপত্র এর প্রয়োজন হবে। সেই কাগজপত্রগুলো আমরা অনলাইনে সাবমিট করলে লোন পেয়ে যাব কাগজপত্রগুলোর সঠিক তথ্য না দিলে আমরা কোনভাবেই অনলাইন থেকে লোন পাবো না। আমরা আলোচনা করছি অনলাইনে লোন পাওয়ার সহজ উপায় সম্পর্কে । অনলাইনে লোন পাওয়ার জন্য আমাদের যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন।
-
- ব্যক্তিগত পরিচয় এর জন্য কেওয়াইসি ভেরিফিকেশন, আধার কার্ড এবং তার সাথে সংযুক্ত মোবাইল নাম্বার, ব্যাংক একাউন্টের বিবরণী ও প্যান কার্ড।
- ঠিকানার পরিচয় এর জন্য আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স অথবা ভোটার আইডি কার্ড এবং পাসপোর্ট, ইউটিলিটি বিল এর প্রমাণ পত্র যেমন বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল, গ্যাসের বিল, টেলিফোন বিল ইত্যাদি।
- ব্যাংক একাউন্ট এর তথ্য – ইন্টারনেট ব্যাংকিং এর তথ্য একাউন্ট হোল্ডার এর।
- আবেদনকারীর আয়ের প্রমাণ বেতনভোগী কর্মচারীদের জন্য বেতনের পে স্লিপ এবং বেতনভোগী কর্মচারী বাদে অন্যদের জন্য তাদের ছবিসহ আর্থিক বিবরণ।
- কাজের বিবরণ দিতে হবে আবেদনকারী যে পেশায় যুক্ত আছে সেই পেশার কাজের বিবরণ সম্পর্কে বর্ণনা দিতে হবে। এবং যদি কোন কোম্পানি তে চাকরি করে তাহলে সেই কোম্পানি সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করতে হবে। এবং প্রমাণ দিতে হবে
আবেদনকারীর বয়স 21 থেকে 58 বছর এর মধ্যে হওয়াটা ভালো এবং তার মাসিক ইনকাম 15,000 হওয়া উচিত । তবে আপনাকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে আয়ের প্রমাণের দিকে কারণ এর মাধ্যমে ঋণ গ্রহণকারীর ঋণ পরিশোধ করার ক্ষমতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ঋণের অর্থ ব্যাংক একাউন্টে চলে আসবে তবে সামান্য কিছুটা সময় প্রয়োজন হতে পারে।
অনলাইনে লোন পাওয়ার সেরা কিছু অ্যাপ
এই সকল অ্যাপ্লিকেশনগুলোর মাধ্যমে আপনি অনলাইনে খুব সহজে লোন পেতে পারেন। অনলাইনে লোন পাওয়ার সহজ উপায় ও কিভাবে অনলাইনে লোন পাবেন সে সম্পর্কে এই লেখাটিতে আলোচনা করা হয়েছে। নিম্নে যেসকল অ্যাপ্লিকেশনগুলোর কথা বর্ণনা করা হয়েছে সেগুলোর মাধ্যমে আপনি খুব সহজে লোন পেতে পারেন ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে।
-
Bajaj Finserv ( বাজাজ ফিনসার্ভ )
বর্তমানে ইন্ডিয়ায় খুব জনপ্রিয় একটি অনলাইন লোন সেবা প্রদানকারী অ্যাপ হল বাজাজ ফিনসার্ভ। লোনের জন্য আবেদন করার 24 ঘন্টার ভিতরে লোনের টাকা পেয়ে যাবেন এই অ্যাপ্লিকেশনটি তাদের গ্রাহকদের ইন্টারেস্ট ই এম আই এর সাহায্যে 45% কিস্তির কমিয়ে ব্যক্তিগত ঋণ দিতে সক্ষম। এই অ্যাপ্লিকেশনটির সর্বোচ্চ লোন সীমা হলো 25 লক্ষ টাকা পর্যন্ত এবং এর ইন্টারেস্ট রেট 12.99%
-
Indiabulls Dhani ( ইন্ডিয়াবুলস ধানি-)
ব্যক্তিগত লোন অ্যাপ্লিকেশন এর মধ্যে সেরা একটি অ্যাপ্লিকেশন ইন্ডিয়াবুলস ধানি। অ্যাপ্লিকেশনটি থেকে লোন নেয়ার জন্য শুধুমাত্র আধার কার্ড নাম্বার ও লোন এর অ্যামাউন্ট দিলেই আপনি টাকা লোন নিতে পারবেন এখান থেকে আপনি 1000 টাকা থেকে শুরু করে 15 লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন নিতে পারবেন। এর ইন্টারেস্ট রেট 13.17% এবং এই এপ্লিকেশন টি আপনি বিনামূল্যে প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন।
-
M pokket ( এম পকেট)
এই অ্যাপ্লিকেশনটি থেকে শুধুমাত্র ইন্ডিয়ার শিক্ষার্থীরা লোন গ্রহণ করতে পারবে। এখান থেকে প্রথমে আপনি 500 টাকা লোন পাবেন এবং পরবর্তীতে লোনের অ্যামাউন্ট বাড়াতে পারে। এই অ্যাপ্লিকেশন টি শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের জন্য। এর ইন্টারেস্ট রেট হল 3.5% এই অ্যাপ্লিকেশনটির একটি সুবিধা হল আপনি লোনের টাকা শোধ করতে পারবেন এক থেকে তিন মাসের মধ্যে।
-
IndiaLends ( ইন্ডিয়া লেন্ড )
এই অ্যাপ্লিকেশনটিতে ইন্টারেস্ট রেট হল 0.9-3% এখান থেকে সর্বোচ্চ লোনের সীমা 15,000 টাকা থেকে শুরু করে 50 লক্ষ টাকা পর্যন্ত। এখান থেকে আপনি অল্প সুদের হারে অধিক টাকা লোন নিতে পারবেন এবং আপনি 48 ঘন্টার ভিতরে ঋণের টাকা পেয়ে যাবেন। এটিকে আমরা ইন্ডিয়ার অন্যতম- সেরা ক্যাশ লোন অ্যাপ্লিকেশন বলতে পারি।
-
kreditBee ( ক্রেডিট বি )
এই অ্যাপ্লিকেশনটিতে সর্বোচ্চ 10 হাজার টাকা থেকে শুরু করে 1 লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন দিয়ে থাকেন। যেকোনো জায়গায় যে কোন মুহূর্তে এই অ্যাপ্লিকেশনটি লোন দিতে সক্ষম অ্যাপ টিতে মাত্র 15 মিনিট সময়ের মধ্যে লোন দিতে সক্ষম হয়ে থাকে। এর ইন্টারেস্ট রেট 2-3% ক্রেডিট বি ইন্ডিয়ান অনলাইন লোন অ্যাপ্লিকেশন হিসেবে অনেক জনপ্রিয়।
-
Smart Coin ( স্মার্ট কয়েন )
এই অ্যাপটিতে ইন্টারেস্ট রেট হল 2.5-3% পর্যন্ত। এখান থেকে আপনি 1000 টাকা থেকে শুরু করে 25 হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন। বর্তমানে ইন্ডিয়ান যুবকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় এই অ্যাপ্লিকেশনটি এখান থেকে শর্ট টাইমে পার্সোনাল লোন পাওয়া যায়। বর্তমানে স্মার্ট কয়েন একটি জনপ্রিয় অ্যাপ্লিকেশন।
অনলাইন লোন প্রদানকারী অ্যাপ্লিকেশন:
এছাড়াও আরও অনেক অনলাইন ঋণপ্রদানকারী এপ্লিকেশন আছে যেমনঃ Capital first Limited, PaySense, Rupees Land, EarlySalary, Money View, Payme India, Flexsalary ইত্যাদি। এই অ্যাপ্লিকেশনগুলোর মাধ্যমে ঘরে বসে অনলাইনে লোন নেয়া সম্ভব।
বিঃদ্রঃ উপরে উল্লিখিত অ্যাপ্লিকেশনগুলোর সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন লোনের সীমা ও ইন্টারেস্ট রেট পরিবর্তন হতে পারে। লোন নেয়ার সময় অবশ্যই এই বিষয়গুলো ভালভাবে খেয়াল করে তারপরে লোনের জন্য আবেদন করবেন।
উপরে উল্লেখিত অ্যাপ্লিকেশনগুলো শুধুমাত্র ইন্ডিয়ায় লোন নেয়ার ক্ষেত্রে কার্যকরী বাংলাদেশে এখনও অনলাইন লোন প্রক্রিয়া চালু হয়নি তবে অতি দ্রুত চালু হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আশাকরি উপরে লেখাটির মাধ্যমে আপনাদের অনলাইনে লোন পাওয়ার সহজ উপায় সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা দিতে পেরেছি এ বিষয়ে অন্য কিছু জানার থাকলে কমেন্টে জানান পরবর্তীতে অন্য কোন আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনাদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।