শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ কৌশল

শেয়ারবাজার এমন একটি জায়গা যেখানে বিভিন্ন কম্পানির স্টক কেনাবেচা হয়।  শেয়ারবাজারকে আমরা স্টক মার্কেটও বলে থাকি। শেয়ারবাজারে আপনারা বিভিন্ন কোম্পানির স্টক কিনে ব্যবসা করতে পারবেন,   শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ কৌশল সম্পর্কে আজকের এই লেখাটি।

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের কৌশল

পূর্বের ন্যায় শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ এখন আরো অনেক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে,  সাধারণ বিনিয়োগকারীরা অতিরিক্ত লাভের উদ্দেশ্যে ভুলভাবে শেয়ারবাজারে অর্থ বিনিয়োগ করে থাকে কিন্তু তারা লাভের পরিবর্তে বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী ক্ষতির সম্মুখীন হয়।  এর একমাত্র কারণ হল শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের কৌশল সম্পর্কে না জেনে বিনিয়োগ করা। 

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ মানে আপনার অর্থের ঝুঁকি নেওয়া।  আজ না হয় কাল শেয়ারবাজারে ধস লাগতেই পারে আমরা পূর্বেও  এমন অনেক ঘটনা দেখেছি । শেয়ারবাজার হলো নদীর তীরে ঘরগুলোর মত,  যখন বন্যা লাগে তখন ঘরগুলো ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে ঠিক তেমনি – শেয়ার বাজারে যখন ধস নামে তখন বিনিয়োগকারীদের লস হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।

তাই বিনিয়োগের আগে কিছু কৌশল আমাদের মেনে চলতে হবে বিশেষ করে যারা নতুন বিনিয়োগ করতে চাচ্ছেন শেয়ারবাজারে। সাধারণত যারা নূতন শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেন তারা সঠিকভাবে শেয়ার বাজার সম্পর্কে না জেনে শেয়ারবাজারে অর্থ বিনিয়োগ করেন এর ফলে বিনিয়োগ লস হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।  শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের কৌশল সম্পর্কে আজকের এই লেখাটি।

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের নিয়ম

শেয়ারবাজার হলো এমন একটি জায়গা যেখানে মানুষ দ্রুত বড়লোক হবার জন্য বিনিয়োগ করে থাকে,  কিন্তু যখন শেয়ারবাজারে ধস নামে তখন সাধারণত নুতন বিনিয়োগকারীরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।  আর যারা তাড়াহুড়া করে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে শেয়ার বাজারের সঠিক নিয়ম না জানে তারাও অনেক সময় ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকে।

অল্প পুজিতে লাভজনক কয়েকটি ব্যবসা

যারা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করার চাচ্ছেন তারা অবশ্যই শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার আগে শেয়ার বাজার সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে নিবেন।  আর কখনোই লোনের টাকা বা কারো কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করবেন না।  এটা হল মানুষের ভাগ্য মতন কখন লাভ হবে লস হবে কিছুই বলা যায় না তাই আপনি যদি কারো কাছ থেকে ধার করে বিনিয়োগ করেন যদি লস হয় তখন আপনি আরো বিপদে পড়ে যাবেন।

এখন অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন তাহলে কি ভাই আমি শেয়ারবাজারে ঝুঁকি নেব না – ঝুঁকি নিবেন না আমি সেটা বলছি না আপনার নিজের যদি মূলধন থাকে তাহলে আপনি শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করুন আর শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার আগে অবশ্যই শেয়ার বাজার সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিবেন।  শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার জন্য কি কি প্রয়োজন?

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ কৌশল
শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ কৌশল

শেয়ারবাজারে কিভাবে বিনিয়োগ করবেন

আজকের লেখাটি শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ কৌশল সম্পর্কে – শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে হলে আপনাদের প্রথমে কি করতে হবে। যারা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে চাচ্ছেন প্রথমে তাদেরকে একটি বিও একাউন্ট খুলতে হবে, বিও একাউন্ট একক বা যৌথভাবে আপনারা খুলতে পারবেন।

  • বিনিয়োগকারীর বয়স অবশ্যই ১৮ বছরের বেশি হতে হবে
  • একাউন্ট করার জন্য যে ফরমটি দিবে সেটি সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে

বিও একাউন্ট খোলার জন্য আপনাদের যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন হবে সেগুলো হলোঃ

  • নিজের পাসপোর্ট সাইজের ২ কপি ছবি 
  • নমিনীর ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি 
  • জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ডের ১ কপি ফটোকপি
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট থাকতে হবে 
  • বিও একাউন্ট খোলার জন্য আপনাকে ৫০০-৭০০ টাকা ফি দিতে হবে 

জয়েন্ট একাউন্ট এর ক্ষেত্রেও উপরে উল্লেখিত কাগজপত্র গুলো প্রয়োজন হবে আর শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার আগে প্রথমত আপনাকে শেয়ার বাজার সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান অর্জন করতে হবে।  এবং আপনার যদি ঝুঁকি নেয়ার ধৈর্য না থাকে তাহলে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করাটা আপনার জন্য ভালো হবে না।

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ জেতার কৌশল

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ জেতার কৌশল সম্পর্কে এই লেখাটি।  যারা শেয়ার বাজারে ব্যবসা করতে চাচ্ছেন তাদেরকে অবশ্যই শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে কিভাবে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে জেতা যায় এবং কখন বিনিয়োগ করতে হবে সে সম্পর্কে অবশ্যই জানতে হবে।  অন্যথায় আপনি শেয়ারবাজারে উন্নতি করতে পারবেন না। 

এখানে আমরা কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করবো এগুলো যদি আপনি মেনে চলেন তাহলে শেয়ারবাজারে উন্নতি করার সম্ভাবনা আছে।  এছাড়াও যারা শেয়ার বাজারে ব্যবসা করতে চাচ্ছেন তাদের নিজেদেরকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে,  সব সময় নিজের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করতে হবে অন্য কারো পরামর্শ নিয়ে যখন তখন যেকোন জায়গায় বিনিয়োগ করা যাবে না।

 শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ জেতার কৌশল বলতে তেমন কোন টিপস নেই তবে কয়েকটি নিয়ম কানুন আছে যেগুলো যদি আপনারা মেনে চলেন তাহলে শেয়ারবাজারে উন্নতি করার সম্ভাবনা আছে।  শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে যে সকল কৌশল গুলো আপনাদের মানতে হবেঃ

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের লক্ষ চূড়ান্ত করতে হবে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের লক্ষ বলতে বোঝানো হয়েছে আমাদেরকে দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নিয়ে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে হবে। আমরা অনেকেই একটা ভুল বেশি করে থাকি শেয়ার কেনার পর দিন থেকেই শেয়ারবাজারে কত টাকা লাভ হল এবং কত সময় হল এই সকল বিষয়ে খোঁজখবর নিতে থাকি, এটি সাধারণত নূতন বিনিয়োগকারীরা বেশি করে থাকে।

 কিন্তু আমাদের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে একটা লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে, আপনি কত বছরের জন্য বিনিয়োগ করতে পারবেন এবং কত টাকা মুনাফা চাচ্ছেন এগুলো লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে।  আর বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার বয়স এবং আর্থিক অবস্থানের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

 একজন বেশি আর্থিক সচ্ছল ব্যক্তি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যতটা ঝুঁকি নিতে পারবেন অন্যথায় একজন মধ্যবিত্ত ব্যক্তি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ততটা ঝুঁকি নিতে পারবেন না তাই অবশ্যই শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের লক্ষ চূড়ান্ত করতে হবে। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে জেতার কৌশল এর মধ্যে এটি অন্যতম।

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ কৌশল
শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ কৌশল

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে ঝুঁকি নিতে হবে

শেয়ার বাজারে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে এটি একটি মূল টার্গেট পয়েন্ট,  আপনি যদি ঝুঁকি নিতে ভয় পান তাহলে শেয়ারবাজার আপনার জন্য না।  অবশ্যই যারা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে চাচ্ছেন তাদেরকে ঝুঁকি নিতেই হবে,  শেয়ারবাজার এমন একটি মার্কেট যেখানে যখন মার্কেট ঊর্ধ্বমুখী থাকে তখন বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অবশ্যই সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে।

পূর্বের তুলনায় শেয়ারবাজারে বর্তমানে অনেক উন্নতি হয়েছে এবং সাথে সাথে আরও বিনিয়োগের ঝুঁকি বাড়ছে। কিছু শেয়ারের দাম পূর্বের চেয়ে চার গুণ বেশি হয়ে গেছে এর সাথে সাথে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ঝুঁকিও অনেকটা বেড়ে গেছে।

বেশি ঝুঁকিতে থাকার পরেও বর্তমানে শেয়ারবাজারে মুনাফা এর হার ভালোই বৃদ্ধি পেয়েছে আপনারা যদি শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে চান তাহলে অবশ্যই বুঝেশুনে সর্তকতা অবলম্বন করে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করবেন।  শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ঝুঁকি নেয়ার পাশাপাশি কিভাবে আপনারা ঝুঁকির আসংখ্যা কমাতে পারেন সেদিকেও নজর রাখতে হবে।  শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার নিজের অবস্থান থেকে যথাসম্ভব ঝুঁকি নিতে হবে। 

বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সঞ্চয়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে

সাধারণত নুতন বিনিয়োগকারীরা এই ভুলটা বেশি করে থাকে তারা তাদের সঞ্চয় এর পুরো টাকাটা একবারে বিনিয়োগ করে। কিন্তু আমাদের এটা করা উচিত না আমাদের সঞ্চয় এর সম্পূর্ণ টাকাটা বিনিয়োগ না করে প্রথমে সঞ্চয়ের 50-60% বিনিয়োগ করতে পারি। যারা অল্পবয়স্ক তারা এই ঝুঁকি নিতে পারেন।

আর যারা বেশি বয়স্ক তারা কোনভাবেই 40-45%  এর বেশি বিনিয়োগ করবেন না। তবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সঞ্চয়ের  এই দিকে আপনাদের বেশি খেয়াল রাখতে হবে প্রথমে যদি সঞ্চয়ের সকল অর্থ বিনিয়োগ করা হয় তখন পরবর্তীতে কোন সমস্যা হলে আমাদের হাতে কিছু থাকবে না।  তাই অবশ্যই বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এদিকে খেয়াল রাখতে হবে। 

গুজব ও লোভ পরিহার করা

সাধারণত শেয়ারবাজারের বেশিরভাগ  বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হয় এই গুজবের শেয়ার কেনার কারণে। গুজবে বিনিয়োগ করে আপনি হয়তোবা  সামান্য কিছু লাভবান হতে পারেন কিন্তু পরবর্তীতে শেয়ারের দাম কমে গেলে তখন লাভের পরিমাণ এর থেকে লস এর পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে যায়। 

গুজবে বেশিরভাগ সময়ে খারাপ শেয়ারগুলোর দাম বাড়ে কিন্তু আবার হঠাৎ করে মার্কেট ডাউন হয়ে যাওয়ার কারণে শেয়ার গুলোর দাম কমে যায় এবং ক্রেতা পাওয়া অনেক কষ্টকর হয়ে যায় তখন আমাদের লচের ভিতর পড়তে হয়। তাই আমার পরামর্শ মতে গুজব পরিহার করতে হবে। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের কৌশল এর ভিতর লোভ ও গুজব পরিহার করা অন্যতম। 

শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ

উপরে আমরা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ কৌশল সম্পর্কে আলোচনা করেছি কিভাবে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করবেন এবং শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে হলে কি কি করা প্রয়োজন।  ও কয়েকটি শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের টিপস সম্পর্কে আলোচনা করেছি  ওইগুলো যদি আপনি সঠিকভাবে মেনে চলতে পারেন তাহলে আশা করছি আপনারা ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিয়োগ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ এ লাভবান হবেন।

আপনি শেয়ারবাজারে কখন বিনিয়োগ করবেন এবং কিভাবে বিনিয়োগ করবেন সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে আপনার ওপর আমরা শুধুমাত্র আপনাকে কয়েকটি ধারণা দিলাম যেগুলো আপনার কাজে আসতে পারে।  শেয়ার বাজার সম্পর্কে যদি অন্য কিছু জানার থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন ধন্যবাদ সবাইকে।

Similar Posts

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।